অনেক সময় আমাদের দাঁতে ক্যারিজ (দন্তক্ষয়রোগ) বা আঘাতজনিত কারনে দাঁতের স্তরক্ষয় হয় কিংবা দন্তমজ্জায় ইনফেকশন হয়ে থাকে তাতে অনেক সময় দাঁতের রুট ক্যানেল চিকিৎসার দরকার হয়ে পড়ে।
যখন আমাদের দন্তমজ্জায় ইনফেকশন হয়ত খনদাঁতে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হয়।সাধারণ ততখনি রুট ক্যানেল চিকিৎসার প্রয়োজন।
সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে আপনার দাঁতের condition কেমন তার উপর।অনেক সময় দেখা যায় ক্যারিজ শুধুমাত্র আপনার দাঁতের এনামেল বাডেন্টিনের সামান্য অংশে ছড়িয়েছে সেক্ষেত্রেওই অংশটুকু পরিষ্কার করে শুধু ফিলিং করে দিলেই চলে।কিন্তু যদি দেখা যায় ইনফেকশন আপনার দাঁতের পাল্প বা দন্তমজ্জা পযন্ত ছড়িয়েছে এবং আপনি তীব্র ব্যাথা অনুভব করছেন অথবা এমনও হয় কোন আঘাতে আপনার দাঁত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেক্ষেত্রে রুট ক্যানেল চিকিৎসা রপ্রয়োজন হয়।
মুলত এই চিকিৎসায় দন্তমজ্জা ফেলে দিয়ে দাঁতের মধ্যকার সমস্ত ইনফেকশন উপযুক্ত পদ্ধতিতে পরিষ্কার করে বিশেষ ধরনেরও ষুধ দিয়ে ড্রেসিং দিয়ে দাঁতটিকে পুরাপুরি সিল করে বিশেষ ধরনের ফিলিং ম্যাটেরিয়াল দিয়ে ফিলিং করে দেওয়া হয়।
যেহেতু আমাদের সামনের দাঁতগুলো আমাদের সৌন্দর্য সহায়ক।এক্ষেত্রে বেশিরভাগই লাইট কিউর কম্পজিট ফিলিং ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করা হয়।বর্তমানে অনেক আধুনিক কম্পজিট ফিলিং ম্যাটেরিয়াল রয়েছে যা আপনা রদাঁতের রঙের সাথে মিলিয়ে ফিলিং করে দেওয়া হয় । পিছনের দাঁতে সাধারনত অ্যামালগাম ফিলিং করা হয়।তবে আজকাল পিছনের দাঁতে ও কম্পজিট ফিলিং ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করা হচ্ছে যা অনেকক্ষেত্রে গতানুগতিক অ্যামালগাম ফিলিং হতে অনেক উন্নত।
আমি আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি যে বেশীরভাগ মানুষ রুট ক্যানেল ট্রিটমেন্ট অপেক্ষা দাঁত ফেলে দেওয়াকে বেশী পছন্দ করেন । তার বেশীরভাগ কারনই হল ব্যাথার আতংক। অথচ মজার ব্যাপার হল রুট ক্যানেল ট্রিটমেন্টে ব্যাথা পাবার প্রশ্নই আসে না।আপনার ডেন্টিস্ট যদি কাজ শুরুর আগে আপনাকে লোকাল অ্যানেস্থেসিয়া দিয়ে সঠিকভাবে অবশ করে নেয় তাহলে আপনার কোন প্রকার ব্যাথা অনুভবই করার কথা না।বরং কারন ব্যাতিত দাঁত ফেলে দিলে পরবর্তীতে ওইজায়গার আশেপাশের দাঁত ফাঁকা হয়ে যাওয়া, কথা বলতে ও খাওয়া দাওয়া করতে সমস্যাসহ নানারকম জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে।
অনেকেই মনে করেন রুট ক্যানেল চিকিৎসায় পার্মানেন্ট ফিলিং দেওয়া হয়ে গেলেই সম্পূর্ণ ট্রিটমেন্ট শেষ।আসলে অনেক ক্ষেত্রেই তা না । কেননা রুট ক্যানেল ট্রিটমেন্টে আমরা দাঁতের ভিতরের সম্পূর্ণ দন্তমজ্জা টুকুবের করে ফেলে দাঁতটিকে মৃত করে দেই । ফলে দাঁতটি তার স্বাভাবিক তা নষ্ট হয়ে যায় এবং দাঁতটি খুব সহজেই ভেঙে যেতে পারে । তাই আমরা দাঁতের উপর এক ধরনের কৃত্তিম মুকুট পরাই যেটাকে ক্রাউন বা ক্যাপ বলে।যা আপনার মৃত দাঁতের স্থায়িত্ব বহুবছর বাড়িয়ে দেয়।
বর্তমানে ক্রাউন ম্যাটেরিয়াল হিসেবে সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত হয় পোরসেলিন ফিউসড মেটাল বা সিরামিক।রুট ক্যানেলের পর আপনার দাঁতটিকে সঠিক আকৃতিতে কেটে নির্দিষ্ট আকার দেওয়া হয়।তারপর আপনার দাঁতের রঙের সাথে রঙ নির্ধারণ করে দাঁতটির সঠিক ছাপ নিয়ে সেটা ডেন্টাল ল্যাব থেকে ওই আকৃতির ও নির্ধারিত রঙের ক্যাপ তৈরি করা হয় । যা ওই দাঁতের উপর বসিয়ে বিশেষ ধরনের ডেন্টাল সিমেন্ট দিয়ে আটকিয়ে দেওয়া হয়। যদি আপনার ডেন্টিস্ট মনে করে আপনার দাঁতের উপরের অংশ অনেক বেশী ভাঙ্গাবা দাঁত অনেক দুর্বল সেক্ষেত্রে অনেক সময় দাঁতের গোঁড়ায় একটি মেটালের খুঁটি বসিয়েও ক্রাউন করা হয় । একে পোস্ট ক্রাউন বলে । এতে দাঁতটি আরও মজবুত ও দীর্ঘস্থায়ী হয়।
কোন বাড়তি যত্নের দরকার হয় না । নিয়মিত দুইবার সঠিক নিয়মে দাঁত ব্রাশ, মাড়ির যত্ন,আর নিয়মিত ডেন্টাল চেক আপ।
Leave your comment
Bangla Soft IT