মানুষের সৌন্দর্যের একটা বড় অংশ জুড়ে আছে তার মুখমণ্ডল। আর সেই মুখমণ্ডল এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল মুখগহ্বর বা ওরাল ক্যাভিটি। এই মুখ গহ্বর এর মূল সৌন্দর্য বর্ধনের কাজটি কিন্তু করে থাকে আমাদের ১৬ জোড়া দাঁত । একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের মুখে সাধারণত ৩২ টি দাঁত থাকে । সুস্থ দাঁত এবং সুন্দর হাসি একে অন্যের পরিপূরক । সুস্থ সবল দাঁত না থাকলে যেমন হাসি ও সুন্দর হবে না। তেমনি আমাদের মুখের অন্যান্য কার্যকলাপ ও ঠিকভাবে হবে না । দাঁত এবং দাঁতের মাড়িকে সুস্থ রাখার জন্য প্রতিদিন দুই বেলাস ঠিক নিয়ম অনুযায়ী দাঁত মাজার কোনই বিকল্প নেই । সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে মাড়ির রোগের সাথে ইদানিং খুব বেশী মাত্রায় পাওয়া যাওয়া রোগ যেমন ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগের মতো রোগের গভীর যোগসূত্র রয়েছে । এ জন্য আগে কখনই দাঁতের যত্নে এতটা গুরুত্ব দেওয়া হয়নি যা কি না ইদানীং দেওয়া হচ্ছে।
বর্তমান যুগে আমরা সবাই কম বেশী দাঁতের ব্যাপারে সচেতন । আমরা প্রায় সবাই জানিযে দিনে দুইবার দাঁত মাজতে হয় । কিন্তু যা জানি না তা হল, কখন কখন দাঁত মাজতে হয় । নিয়ম হল সকালে নাস্তা খাবার পরে এবং রাতে ঘুমানোর আগে দাঁত মাজতে হবে । এখানে উল্লেখ্য যে, আমরা সাধারণত সকালে ঘুম থেকে উঠেই দাঁত মাজি । কিন্তু সঠিক নিয়মানুযায়ী তা হল নাস্তা করার পরে । অনেকেই কমপ্লেইন করেন যে সকালে দাঁত মাজার সময় বমি ভাব হয় । আমার বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে বলতে পারি যে কেউ যদি সকালে নাস্তার পরে দাঁত মাজেন তবে এই সমস্যা প্রায় থাকে না বললেই চলে ।
এটিও একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যে আমাদের কতক্ষন ধরে দাঁত মাজতে হবে । দন্তচিকিৎসাবিজ্ঞানে বলা হয়ে থাকে যে অন্ততপক্ষে ২ মিনিট বা ১২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে দাঁত মাজতে হবে । গবেষণায় দেখা গেছে প্রায় কোন পূর্ণবয়স্ক মানুষই এত সময় ধরে দাঁত মাজেন না ।
সঠিকভাবে দাঁত মাজার জন্য ছোট ছোট মৃদুস্ট্রোক ব্যবহার করুন । মাড়ি এবং দাঁতের সংযোগ স্থল, সহজে ব্রাশ পৌছায় না এর কম জায়গা, পিছনের দাঁত এবং মুখে কোন ফিলিং বা ক্রাউন/ ক্যাপ করা থাকলে সে সমস্ত জায়গায় অতিরিক্ত মনোযোগ দিয়ে ব্রাশ করুন । নিম্নরুপে প্রতিটা ভাগে মনোযোগ দিয়ে দাঁত ব্রাশ করুনঃ
বেশিরভাগ দন্তচিকিৎসকরাই নরম দাঁত মাজার ব্রাশ পছন্দ করেন । ছোট মাথার ব্রাশ ও ব্যবহার করতে পারেন কেন না এই ধরণের ব্রাশ দিয়ে মুখের কঠিন জায়গাগুলোতে খুব সহজেই পৌঁছানো সম্ভব।
আমি যে টুথপেস্ট ব্যবহার করি সেটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
টুথপেস্ট এর ব্যাপারে অনেক দন্তচিকিৎসক দ্বিমত পোষণ করেন।তবে দিনশেষে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল আপনার দাঁত মাজার টেকনিক । পেস্ট এর চেয়ে এটিই বেশী গুরুত্বপূর্ণ । তবে ইদানীং কিছু অ্যান্টিসেনসিটিভিটি টুথপেস্ট বের হয়েছে, যে গুলো মোটামুটি ভালই কাজ করে ।
সাধারণত প্রতি ৩ মাস পর পর ব্রাশ বদলে ফেলাটাই ভালো।তবে ব্রাশ যতক্ষণ তার কেনার পরের শেপ ধরেরা খছে,ততক্ষন পর্যন্ত ব্রাশটি ব্যবহার করা যায়।
তবে সব কথার শেষ কথা হল, এখনি সঠিক সময় একটি সুস্থ সুন্দর হাস্যজ্জল আগামী গড়ে তোলার জন্য কাজ করার । আর এর জন্য প্রতিটি ঘরে নিয়মানুযায়ী দাঁত ব্রাশ করার অভ্যাস গড়ে তোলার কোন বিকল্প নাই । এবং সর্বোপরি অন্তত প্রতি ৬ মাসে একবার আপনার দন্তচিকিৎসকের কাছে যেয়ে দাঁত চেকআপ করান । কোন সমস্যা পাওয়া গেলে তা শুরুতেই চিকিৎসা করিয়ে নিন । সুস্থ থাকুন, ভালোথাকুন । ধন্যবাদ ।
Leave your comment
Bangla Soft IT